রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে ৩রা নভেম্বর জেল হত্যা দিবস পালিত হয়েছে। রবিবার সকালে এ উপলক্ষে নগর ভবন সিটি হল রুম কক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান এঁর স্মৃতিময় জীবনের ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়। এর আগে সকালে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ নগর ভবন হতে শোক র্যালি বের করে শহীদ এ.এইচ.এম কামারুজ্জামান এঁর কবরে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন শেষে দোয়া করা হয়। রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাওগাতুল আলমের সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাসিকের প্যানেল মেয়র-১ ও ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ সরিফুল ইসলাম বাবু।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্যানেল মেয়র বাবু বলেন, ৩রা নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী ও চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী ও এএইচএম কামারুজ্জামানকে এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যমত্মরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আজ জাতি চরম শ্রদ্ধাভরে এ দিনটিকে স্মরণ করছে। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনও নানা কর্মসূচি পালন করছে। সকালে শোক র্যালি, জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান এঁর কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম সহযোগী জাতীয় চারনেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান এর সুযোগ্য পুত্র রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন তাঁর পিতার অসমাপ্ত কাজগুলোকে এগিয়ে যেতে নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
প্রধান আলোচক প্রফেসর ড. আবুল কাশেম বলেন, আজ ৩ নভেম্বর জেলহত্যা দিবস। পচাঁত্তরের পনেরই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর দ্বিতীয় কলঙ্কজনক অধ্যায় এই দিনটি। পনেরই আগস্টের নির্মম হত্যাকন্ডের পর তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী ও চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী ও এএইচএম কামারুজ্জামানকে এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যমত্মরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এর আগে এই চার জাতীয় নেতাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এ নির্মম ও বর্বরোচিত ঘটনার পরদিন তৎকালীন উপ-কারা মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন) কাজী আবদুল আউয়াল লালবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। জাতি আজ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী ও চার জাতীয় নেতাকে যথাযথ শ্রদ্ধা প্রদর্শনের মাধ্যমে দেশের ইতিহাসের অন্যতম বর্বরোচিত এই কালো অধ্যায়টিকে স্মরণ করেছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে এবং আওয়ামী লীগ সহ বিভিন্ন দল সংগঠনের উদ্যোগে সারাদেশে পালিত হচ্ছে শোকাবহ এই দিবস। ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকা- জেলহত্যার ৪৪ বছর পার হয়ে গেলেও এখনো এই হত্যা মামলার রায় কার্যকর হয়নি। এই হত্যাকা--র রায় অতিদ্রুত কার্যকর করার দাবী আজও প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। এই হত্যার বিচার করার মধ্যে দিয়ে জাতি কলঙ্কমুক্ত হবে। আগামী প্রজন্মকে এ দেশের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরম্নজ্জামান।
মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন রাসিকের প্যানেল মেয়র-২ ও ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ রজব আলী, সচিব আবু হায়াত মোঃ রহমতুল্লাহ, প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুল হক। আলোচনা সভা শেষে জাতীয় চার নেতার আত্নার মাগফিরাত কামনায় দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন রাজশাহী মহানগর ওলামা কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মাওলানা মোঃ আইয়ুব আলী। দুপুরে এ উপল নগরভবন জামে মসজিদ ও সোনাদিঘি জামে মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে রাসিকের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।