বর্ণাঢ্য আয়োজনে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনায় রাজশাহী শুরু হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষ্যে মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা কার্যক্রম। বঙ্গবন্ধুকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার বিকেলে ঢাকার তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে অবস্থিত জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে থেকে সারাদেশে একযোগে ৮৭টি স্থানে ক্ষণগণনার শুভ উদ্বোধন করেন। এরমধ্যে রাজশাহীতে ২টি স্থানে ক্ষণগণনা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়।
রাজশাহীতে ক্ষণগণনা কার্যক্রমের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে নগর ভবন ও সাহেব বাজার বড় মসজিদ চত্বরে ২টি ক্ষণগণনা যন্ত্র স্থাপন এবং প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান বড় পর্দায় সরাসরি সম্প্রচারের আয়োজন করেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। বিকেলে নগরভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দেন সিটি মেয়র লিটন। নগরভবনে ৭টি বড় পর্দায় প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়।
শুক্রবার দুপুর ২টার পর থেকে নগরভবনে জড়ে হতে থাকেন রাজশাহী সকল সরকারি অফিসের কর্মকর্তা উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীবৃন্দসহ, সামাজিক,সাংস্কৃতিক,স্বেচ্ছাসেবী, পেশাজীবীসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ। সিটি কর্পোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ড কাউন্সিলের নেতৃত্বে প্রতিটি ওয়ার্ড থেকে র্যালি নিয়ে আয়োজনস্থানে যোগ দেন। হাজার হাজার জনসাধারণের ঢল নামে নগরভবন চত্বরে। নগরভবন চত্বর, শহীদ কামারুজ্জামান চত্বর থেকে দড়িখরবনা মোড়, গ্রিনপ্লাজাসহ আশপাশের সব এলাকায় জনসাধারণে কানাই কানাই পূর্ণ হয়। শিক্ষার্থীরা সর্বসাধারণ আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেন। অনুষ্ঠানে সিটি কর্পোরেশনের প্রায় তিন হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দরে অবস্থিত জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে আয়োজিত অনুষ্ঠান সরাসরি দেখে আমরা ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারির সেই মুহূর্তে যেন চলে গেলাম। যার রেশ এখনো রয়ে গেছে। আবেগঘন দিনটি স্মরণ করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও কেঁদেছেন। আমাদের এই আবেগ থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করতে হবে।
মেয়র আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু দেশে ফিরে দেশকে গড়তে শুরু করেন। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারী ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুকে তাঁর সোনার বাংলা গড়ার কাজ শেষ করতে দেননি। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করছেন। আজ থেকে মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা শুরু হলো। বছরব্যাপী রাজশাহীতেও বিভিন্ন কর্মসূচিতে মুজিববর্ষ উদযাপন করা হবে।
এ মেয়র অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার মোঃ হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য প্রফেসর সাইদুর রহমান খান, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ হুমায়ুন কবির, রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি একেএম হাফিজ আক্তার, জেলা প্রশাসক মোঃ হামিদুল হক, জেলা পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ, রাজশাহীতে নিযুক্ত ভারতীয় সহাকারী হাইকমিশনার সঞ্জিব কুমার ভাটি, রাসিকের প্যানেল মেয়র-১ ও ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সরিফুল ইসলাম বাবু, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুলতান আব্দুল হামিদ, রাজশাহী রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের জিএম পশ্চিম মিহির কামিত্ম গুহ, র্যাব-৫ অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান, বিজিবি রাজশাহীর ব্যাটালিয়ন কমান্ডার ফেরদৌস জিয়াউদ্দিন, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক শ্যাম কিশোর রায়, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) ড. মোঃ আব্দুল মান্নান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার সার্বিক মোঃ জাকীর হোসেন, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন ও আইসিটি) এ.এন.এম মঈনুল ইসলাম, আরএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার সুজায়েত ইসলাম ও সালমা বেগম পিপিএম, রাজশাহী শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোকবুল হোসেন, রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর হবিবুর রহমান, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী, নিউ ডিগ্রী গভঃ কলেজের অধ্যক্ষ জার্জিস কাদির, পোস্টাল একাডেমির অধ্যক্ষ মোঃ শহিদুল ইসলামসহ সকল সরকারি অফিসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ। অনুষ্ঠানের তত্ত্বাবধায়নে ছিলেন রাসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হায়াত মোঃ রহমতুল্লাহ। অনুষ্ঠানে রাসিকে প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল হক, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা শাহান আকতার জাহান, মাননীয় মেয়র‘র একান্ত সচিব মোঃ আলমগীর কবির, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রে সমর কুমার পালসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
অন্যদিকে একই বিশাল জমায়েত নিয়ে সাহেব বাজার বড় মসজিদ চত্বরে শুরু হয় ক্ষণগণনা কার্যক্রম। এখানেও ২টি বড় পর্দায় প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দেন মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি বিশিষ্ট সমাজসেবী শাহীন আকতার রেনী। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মীর ইকবাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা নওশের আলী, মাহফুজুল আলাম লোটন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোসত্মাক হোসেন, রেজাউল ইসলাম বাবুল, নাইমুল হুদা রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড আসলাম সরকার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে মহানগর, থানা, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, বিশিষ্ট নাগরিক, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সর্বস্তরের হাজার হাজার জনসাধারণ অংশ নেন।
ক্ষণগণনার উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পর নগর ভবনের গ্রিনপস্নাজায় অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।