রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্কে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এই কর্মসূচিতে পার্ক চত্বরে এক হাজার বৃক্ষরোপণ করা হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাই টেকপার্ক স্থাপন অতি উন্নত রাজশাহীর সংস্করণ। রাজশাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক শহর। এখানে শিল্প কারখানা তেমন হয়নি। অল্পে তুষ্ট হওয়ায় আমরা পিছিয়ে। ফলে এখানে আর্থিক প্রবাহ কম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দেশের সকল অঞ্চলের চাহিদা বোঝেন। তাঁর দূরদৃষ্টিতে এ অঞ্চলকে এগিয়ে নিতে তিনি এখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক স্থাপন করেছেন। শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগিয়ে গার্মেন্টস সেক্টরের মত বৃহত্তর খাতের ন্যায় এ অঞ্চলের আর্থিক প্রবাহ বৃদ্ধি করা হবে। ফ্রি ল্যান্সিং করে প্রচুর আয় করা সম্ভব হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আয়ের বিরাট খাত সৃষ্টি করে দিয়েছেন। এ সুযোগটি ব্যবহার করে আগামী ৪/৫ বছরে ৫ বিলিয়ন ডলার আয় ছাড়িয়ে যাবে। আগামীতে আরও বিনিয়োগ করা হবে।
অনুষ্ঠানে উদ্বোধকের বক্তব্যে আইসিটি জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সবুজ শ্যামল বাংলা গড়ে তুলবো আমরা এই স্লোগানকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্কে এক হাজার গাছ লাগানোর কর্মসূচির উদ্বোধন করা হলো। জননেত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহী অসমাপ্ত কাজ সম্পন্নের জন্য খায়রুজ্জামান লিটনকে দায়িত্ব প্রদান করেছিলেন। মাত্র সাড়ে চার বছরে রাজশাহীকে তিলোত্তমা নগরীতে পরিণত করেছিলেন মেয়র লিটন। ২০১১ সালের ২৪ নভেম্বর এক জনসভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে মেয়র লিটন রাজশাহীতে হাইটেক পার্ক নির্মাণের অনুরোধ করেছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালে এটি একনেকে প্রজেক্ট পাস হয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসের জনপদ রাজশাহীকে পিছিয়ে পড়া এলাকার ছিল রাজশাহী। যে রাজশাহীতে বিদ্যুতে আন্দোলন করতে জীবন দিতে হয়েছিল। দিনে দুপুরে মানুষ হত্যা করেছিল। সেই রাজশাহীর দায়িত্ব দিয়েছিল জননেত্রী শেখ হাসিনা আজকের মেয়র এইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের উপরে। সেই সন্ত্রাসের জনপদ রাজশাহীকে মাত্র সাড়ে চার বছরে রাজশাহীকে তিলোত্তমা নগরী পরিণত করে ছিলেন। সাবেক মেয়র সাজানো তিলোত্তমা নগরীকে ধ্বংস স্ত্তপে পরিণত করেছিলেন। রাজশাহী ভুলবুঝে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে আবারও মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করেছে। অসামপ্ত কাজ সমাপ্ত করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যা বলে তা কাজে প্রমাণ করে। জননেত্রী শেখ হাসিনা যা প্রতিশ্রুতি দেয় তা পূরণ করে এবং আওয়ামী লীগের আদর্শ বঙ্গবন্ধু আদর্শ জনগণের সাথে প্রতারণা নয়। জনগণকে ভালবাসা এবং উন্নয়ন দিয়ে দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তারই ফল আজকের শেখ মুজিব হাইটেক পাক। মেয়র লিটনের নেতৃত্বে হাইটেক পার্কের কাজ শেষ করব এবং রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনকে একটি আধুনিক স্মার্ট সিটিতে পরিণত করব। ঐতিহাসিক রাজশাহী প্রযুক্তি নগরীতে পরিণত করবো। এটার ছিল কমিটমেন্ট এটাই ছিল আমাদের প্রত্যয়।
প্রতিমন্ত্রী পলক আরো বলেন, মাত্র ২ বছরের মধ্যে এখানে ৪৩ কোটি ব্যয়ে ৭২ হাজার বর্গফুটে ৩ অফিস রেডি। রাজশাহীতে বিশ্ববিদ্যালয় আছে, মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় দিয়েছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা এখানে রুয়েট, রাজশাহী কলেজ, সিটি কলেজ, নিউডিগ্রী কলেজ, বরেন্দ্র পাবলিক প্রাইভেট যতগুলি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে প্রায় ১ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। তাদের কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশ যেতে হবেনা। এমনকি ঢাকায় গিয়েও স্যান্ডেলের তলা ক্ষয় করতে হবে না। জননেত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ মানে ঢাকা নয়, ঢাকার বাইরে রাজশাহী, বরিশাল, খুলনা, চট্ট্রগাম সবজায়গা যাতে তরুণ প্রজন্মের কর্মস্থানের ব্যবস্থা হয় তার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার নূর উর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মোঃ হামিদুল হক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক প্রকল্প পরিচালক একেএম ফজলুল হকসহ রাসিকের কাউন্সিলরসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।