চলমান পরিস্থিতিতে রাজশাহীর ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র জননেতা এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। বুধবার (২৪ জুলাই) দুপুরে নগর ভবনের সিটি হলরুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ বলেন, মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহীবাসীর নিরাপত্তায় সব সময় মাঠে ছিলেন। সিটি মেয়রের সাহসী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে রাজশাহীতে বড় ধরনের নৈরাজ্য ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে পারেনি দুর্বৃত্তরা। সভায় বরাজশাহীতে সকাল-সন্ধ্যা কারফিউ শিথিল, নিরাপত্তা জোরদারসহ বিভিন্ন দাবি জানান ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ।
মতবিনিময় সভায় রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ২০১৩/২০১৪ সালে যারা আগুন সন্ত্রাস করে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছিল, সেই সন্ত্রাসীরা শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনে অনুপ্রবেশ করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় ধ্বংসাত্মকমূলক কর্মকাণ্ড করেছে।
তিনি আরো বলেন, পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়েছে, বিএনপি-জামায়াতের যেসব ক্যাডার ঢাকায় ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমে যুক্ত ছিল, তারা ঢাকা থেকে নিজ নিজ এলাকায় ফিরে আসছে। তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। শহরের কোথায় সন্দেহজনক ব্যক্তির অবস্থান বা চলাফেরা দেখা গেলে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের খবর দিবেন। আমাদের সজাগ থাকতে হবে। যাতে কেউ যেন কোন অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে।
রাসিক মেয়র বলেন, রাজশাহীর পরিবেশ যেহেতু শান্তিপূর্ণ আছে, সে জন্য যত বেশি সময় সম্ভব কারফিউ শিথিলের জন্য আমি প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলবো।
রাসিক মেয়র বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গরীব ও নিম্ন আয়ের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। আমি গরীব ও নিম্ন আয়ের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ রাজশাহীবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। অতীতে আমরা কোভিডসহ যেকোন দুর্যোগ যেভাবে মোকাবেলা করেছি, এবারো সেভাবে মোকাবেলা করতে পারবো।
সভায় রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে ব্যবসারী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে আম ও মৎস ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে ক্ষতিকে সামলে নিয়ে কীভাবে আমরা এগোতে পারি, সেজন্য মেয়র মহোদয় সভা আহ্বান করেছেন। এজন্য মেয়র মহোদয়কে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার হাসান কবির বলেন, আমরা ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডকে সমর্থন করি না। আমরা এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তিনি আরো বলেন, আমরা প্রমাণ করেছি রাজশাহীর মানুষ শান্তিপ্রিয়। মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে রাজশাহীতে কোন নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারেনি দুর্বৃত্তরা।
রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটু বলেন, মেয়র মহোদয় সকাল-সন্ধ্যা মাঠে ছিলেন, নগরবাসীর নিরাপত্তায় পাহাড়ায় ছিলেন। সেই কারণে রাজশাহীতে বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থানে সেসব নৈরাজ্য ঘটেছে, ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
আরডিএ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ফরিদ উদ্দিন বলেন, দেশে যে নৈরাজ্যকর ঘটনা ঘটেছে, ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে। রাজশাহীতে কারফিউ সকাল-সন্ধ্যা শিথিল করার অনুরোধ জানাই। আমরা যেন স্বাভাবিক অবস্থান ফিরে যেতে পারি।
রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি রিয়াজ আহমেদ খান বলেন, রাসিক মেয়র মহোদয় সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সিটি মেয়রের সঠিক তৎপরতার কারণে রাজশাহীতে বিশৃঙ্খলা হয়নি। আমি মেয়র মহোদয়কে ধন্যবাদ জানাই।
রিয়েল এস্টেট এন্ড ডেভেলপার এসোসিয়েশন (রেডা) এ সভাপতি তৌফিকুর রহমান লাভলু বলেন, নগরপিতা হিসেবে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ভাই যথাসময়ে যথা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর সুদৃঢ় নেতৃত্বের কারণে রাজশাহীর পরিবেশ এখনো নিয়ন্ত্রণে ও শান্তিপূর্ণ রয়েছে। আমরা আশা করি এটি বজায় থাকবে। আমরা সকলে নগরপিতাকে সহযোগিতা করি।
রেডার সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান কাজী বলেন, আমরা ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আমাদের উপর যারা নির্ভরশীল সেসব দিনমজুর, শ্রমিক ও পরিবহন শ্রমিক ভাইয়েরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষেরা কষ্টে আছে। আমরা নিজ নিজ জায়গা থেকে তাদের পাশে দাঁড়াই।
মহানগর পাদুকা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শফিকুর রহমান রিপন বলেন, সারাদেশে বিশৃঙ্খলা হলেও রাজশাহীতে অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটেনি। রাজশাহীর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও শান্তিপূর্ণ রয়েছে। মেয়র মহোদয় বিপদে আপদে আমাদের পাশে আছেন, আমরা তাঁর পাশে আছি। ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের চলাচলের স্বার্থে কারফিউ সকাল-সন্ধ্যা শিথিল করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
সভামঞ্চে ছিলেন রাজশাহী চেম্বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি সুলতান মাহমুদ, আরো বক্তব্য দেন ভদ্রা কাঁচাবাজার সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদিন চাঁদ, রাজশাহী বাণিজিক মৎস খামার মালিক সমিতির সদস্য সচিব খায়রুল বাশার প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন রাজশাহী চেম্বারের পরিচালক সাদরুল ইসলাম। সভায় বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।