প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছেন, আজকের তরুণরাই আগামীর বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। তাই তোমরা যারা তরুণরা দেশকে ভালোবাস, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বিশ্বাস করো, তারা কখনো ভুল করবে না। তরুণরাই বাংলাদেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে।
মঙ্গলবার দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘গৌরবের অভিযাত্রায় ৭০ বছর, তারুণ্যের ভাবনায় আওয়ামী লীগ’ শীর্ষক এক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী তরুণরা বিভিন্ন বিষয়ে অতিথিদের প্রশ্ন করেন আর অতিথিবৃন্দ সেসব প্রশ্নের উত্তর দেন।
তরুণ-তরুণীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এইচ টি ইমাম আরো বলেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছিল, ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ কেমন হবে। ভবিষ্যতের সেই ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, তরুণরা তারুণ্যদীপ্ত। বঙ্গবন্ধু, নেতাজী সুভাস চন্দ্র বসুর জীবনী পড়লে আমরা জানতে পারি তারা তরুণ বয়সে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তবে চিন্তা-ভাবনা যদি সতেজ হয়, তবে তুমি সব সময় তরুণ।
অপর প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মেধাবী তরুণ সজীব ওয়াজেদ জয় ও অটিজম বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ পুতুল। তারা রাজনীতিতে আসবেন কী আসবেন না, এটি তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে আমরা মনে করি তারা যদি রাজনীতিতে আসে, তবে রাজনীতি ও বাংলাদেশ সমৃদ্ধ হবে।
দলে অনুপ্রবেশকারীদের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা প্রথমদিকে অনুপ্রবেশকারীদের ব্যাপারে অতটা সাবধান ছিলাম না। কিন্তু পরে দেখা গেল, অনুপ্রবেশকারীরা দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার পাশাপাশি দেশেরও ক্ষতি করছে। বর্তমান অভিযান হঠাৎ সিদ্ধান্তে আসেনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাতে তথ্যপ্রমান আসার পর অভিযান শুরু হয়। দলে অনুপ্রবেশকারীদের ঝেটিয়ে বিদায় করে পরিচ্ছন্ন দল গড়ে তোলা হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বব্যাপী ছড়ানো হয়। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে গুজব প্রতিরোধে তরুণদের সরব থাকতে হবে। আর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সকলের নিরাপত্তার জন্য তৈরি করা হয়েছে।
রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহীতে দীর্ঘদিনেও শিল্পায়ন গড়ে ওঠেনি। বাবা শহীদ কামারুজ্জামান তৎকালীন সময়ে কিছু শিল্প-কারাখান গড়ে তুলেছিলেন। এরপর আর শিল্পায়ন হয়নি। রাজশাহীর সিল্কের ব্যাপক সম্ভাবনা এখনো রয়েছে। এই সিঙ্কে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জের লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি মেয়র লিটন আরো বলেন, শিক্ষানগরী রাজশাহীতে বঙ্গবন্ধু হাইটেক পার্ক নির্মাণ হচ্ছে। এই পার্কে প্রায় ১৪ হাজার ছেলে-মেয়ের কর্মসংস্থান হবে। এছাড়া রাজশাহীতে গার্মেন্টস ও শিল্পকারখানা গড়তে ব্যবসায়ী সংগঠনের শীর্ষনেতাদের অনুরোধ জানিয়েছি। শিল্প-কারখানা মালিকেরা যদি রাজশাহীতে এসে তাদের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন, অনেক কর্মসংস্থান হবে।
অপর প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে বখাটের তৎপাতের ব্যাপারে আমার কাছে এসে সুনির্দিষ্ট তথ্য দেওয়া হলে নগরপিতা হিসেবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এসব বখাটেরা যে রাজনৈতিক রঙের হোক না কেন, তাদের ছাড় দেয়া হবে না।
মেয়র জানান, রাজশাহীতে যেসব আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ, তাদের পরিবারে একজনকে চাকরি দেওয়ার প্রচেষ্টা অব্যহত রয়েছে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, এক সময় রাজশাহী ছিল অশান্তির জনপদ। মাননীয় মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহীকে শান্তির জনপদে পরিণত করেছেন। এখন সবুজ পরিচ্ছন্ন নগরী রাজশাহী। রাজশাহীতে এক জনসভায় খায়রম্নজ্জামান লিটনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখানে হাইটেক পার্ক গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই ঘোষণা অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হাইটেক পার্ক গড়ে উঠছে।
প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, নেতার উপর দলের ভাবমূর্তি নির্ভর করে। যেমন রাজশাহীতে দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতদিন বেঁচে থাকবেন, ততদিন যাদের কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে, তাদের ছাড় দিবেন না।
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটি আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য প্রফেসর মেরিনা জাহান। অনুষ্ঠানে রাজশাহী মহানগরীর এবং জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত শিক্ষার্থী ও তরুণ-তরুণীরা অংশ নেন।