Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১৮ মার্চ ২০১৯

বর্ণাঢ্য ও বর্ণিল আয়োজনে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে রাজশাহীতে শুরু হলো ১০ দিনব্যাপী বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সাংষ্কৃতিক উৎসব-২০১৯


প্রকাশন তারিখ : 2019-03-17

বর্ণাঢ্য ও বর্ণিল আয়োজনে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে রাজশাহীতে শুরু হলো ১০ দিনব্যাপী বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সাংষ্কৃতিক উৎসব-২০১৯। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের পৃষ্ঠপোষকতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ১৭ মার্চ (রোববার) নগরভবনের গ্রিনপ্লাজায় উৎসব ও বই মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সদস্য সচিব কবি শেখ হাফিজুর রহমান।

          জানা গেছে, রোববার সকাল ১০টায় উৎসব উপলক্ষ্যে সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে নগরীর কুমারপাড়া মোড় থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট হয়ে সোনাদীঘির মোড় ঘুরে নিউ মার্কেটের সামনে দিয়ে নগরভবনের গ্রিনপ্লাজায় গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর প্রফেসর ড. আতিউর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহীন আকতার রেনী, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদের সহ-সভাপতি ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্নাসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, আদিবাসী, খেলোয়াড়, বিএনসিসি, স্কাউটস ও গার্লস গাইড, স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, নৃত্যদল, সমাজের অন্যান্য প্রতিনিধি, স্থানীয় সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন সমূহ অংশগ্রহণ করে।

          এরপর নগরভবনের গ্রীন পস্নাজায় জাতীয় পতাকা ও সিটি কর্পোরেশনের পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করেন মেয়রসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ, রাসিক কাউন্সিলরবৃন্দ, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। পরে অনুষ্ঠিত হয় মূল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন মেয়র এএইচএম খায়রম্নজ্জামান লিটন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর প্রফেসর ড. আতিউর রহমান বলেন, দেশ স্বাধীনের পর সুবিবেচনাভিত্তিক কৃষি ও শিল্প নীতির আলোকে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু অপশক্তি তাঁকে আমাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছিলো এবং আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের পথ থেকে সরে এসেছিলাম। বহু বছর এবং বহু সংগ্রাম ও ত্যাগের পর আমরা আবার তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়ন অভিযাত্রার পথে আবার ফিরে আসতে পেরেছি।

তিনি আরো বলেন, দারিদ্র্য, রপ্তানি পণ্যে বৈচিত্রের অভাব, জনসম্পদের দক্ষতার ঘাটতির মতো কিছু চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও আমরা আশাবাদি যে একটি গতিশীল ও বর্ধিষ্ণু অর্থনীতির দেশ হিসেবেই আমরা অল্প সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী পালন করতে পারবে। আমাদের সমাজ এবং অর্থনীতিকে আমরা একটা শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করাতে পেরেছি। এই শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েই ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ এর বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের মর্যাদা অর্জনের যে স্বপ্ন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের দেখিয়েছেন তা বাস্তবায়ন করতে পারবো বলে আশা রাখি। তবে এজন্য অবশ্যই সামাজিক-রাজনৈতিক এবং আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে। এই মহা স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব হবে কেবল মাত্র অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন  নিশ্চিত করার মাধ্যমেই।

          অনুষ্ঠানের উদ্বোধক বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের সদস্য সচিব কবি শেখ হাফিজুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৯ মাস যুদ্ধের পরে বাংলাদেশের মানুষ অর্জন করে স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধু আমাদের দিয়ে যান, একটি স্বতন্ত্র আবাসভূমি, ভৌগোলিক অবস্থানসহ, একটি জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে - কবিগুরু রবীন্দ্রাথ ঠাকুরের ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’। সারাবিশ্বের দিয়ে যান, স্বতন্ত্র একটি জাতিসত্তার পরিচয়। যে পরিচয় শুধু গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলের মানুষই নয়, পৃথিবীর স্থানে বসবাসরত সমগ্র বাঙালি গর্ব করে বলতে পারে, আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার অহংকার।

          সভাপতির বক্তব্যে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর একজন ক্ষুদ্র কর্মী। তাঁর সারা জীবনের যে স্বপ্ন, যে চিন্তা, যে ভাবনা, বাংলাদেশকে নিয়ে তিনি যে আমার বাংলা, আমার বাংলার মানুষ, আমার বাঙালী-এই কথাগুলো বলতেন। এই কথাগুলো আজকে সত্যি প্রমানিত হয়েছে। ১৯৭৫ পরবর্তী কিছুকাল কালো মেঘে বাংলাদেশকে ঢেকে রাখা হয়েছিল, ইতিহাসকে বিকৃতি করা হয়েছিল, আমাদের ২/৩টা প্রজন্মকে বিপথগামী করা হয়েছিল। কিন্তু এখন সুখের বিষয় বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপূর্ব দৃঢ়তায়, রাজনৈতিক মেধা ও প্রজ্ঞা দিয়ে আজকে সকল অপশক্তিকে ব্যর্থ করে দিয়ে জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সগৌরবে মাথা উচুঁ করে বিশ্বকে জানিয়ে দিচ্ছে, আমরা রবীন্দ্রনাথের সোনার বাংলা, নজরুলের বাংলাদেশ, জীবনান্দের রুপশী বাংলা, রুপের যেন নাইকো শেষ।

            মেয়র আরো বলেন, অর্থনৈতিকসহ বিভিন্ন দিক দিয়ে বাংলাদেশের সক্ষমতা বেড়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গিবাদ দমন করেছেন। সন্ত্রাসীরা বড় কোনো ঘটনা ঘটাতে পারেনি। আগেই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের ধরে ফেলে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-মহাদেশের প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক, রাবির সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড.আবদুল খালেক, মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহীন আকতার রেনী, রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, বিভাগীয় কমিশনার নুর উর রহমান, আরএমপি পুলিশ কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার, ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপু। উৎসব উদযাপন পরিষদের আহবায়ক ভাষাসৈনিক আবুল হোসেন স্বাগত বক্তব্য দেন।

          অনুষ্ঠানে কথা সাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক ও ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপুকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন মেয়র খায়রম্নজ্জামান লিটন। এছাড়া চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।

১ম দিনের দ্বিতীয় অধিবেশনে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান, জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও সাংস্কৃতিক উৎসব অনুষ্ঠিত হবে।

          উল্লেখ্য, ১০ দিনের উৎসবে ভারত, নেপালসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশ নিচ্ছে। আগামী ২৬ মার্চ পর্যন্ত নানা আয়োজন রয়েছে উৎসবে।