রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ও ওয়েস্ট টেকনোলজিস এলএলসির মধ্যে বর্জ্য আবর্জনা হতে ডিজেল (জ্বালানী), জৈব সার, বায়োগ্যাস তৈরির পাইলট প্রজেক্টের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। সন্ধ্যায় নগরভবন সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানে এ সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
এ সময় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের (রাসিক) মাননীয় মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্থায়ী কমিটির সভাপতি প্যানেল মেয়র-১ ও ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ সরিফুল ইসলাম বাবুর সভাপতিত্বে এ সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- প্রবাসী বিজ্ঞানী ওয়েস্ট টেকনোলজিস এলএলসি প্রতিষ্ঠানের সিইও ড. মঈনউদ্দিন সরকার, ড. আনজুমান সেলী, রাসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মোমিন, সাবেক এয়ার কমোডর সামাদ আজাদ, রাবির সাবেক প্রোভিসি প্রফেসর ড. মামুনুল কেরামত।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ড. মঈনউদ্দিন এ প্রকল্পের কথা আমাদের প্রথমে জানালে আমরা তা কাউন্সিলরদের সঙ্গে আলোচনা-পর্যালোচনা করেছি। তিনি আমেরিকার প্রবাসী হয়ে এতো বছর পর দেশে এসে তার অর্জন বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের কাছে এ বর্জ্য থেকে জ্বালানী উৎপাদনের প্রক্রিয়াটি এখনও বিস্ময়। এটি কিভাবে সম্ভব! তবুও মানুষ আশা নিয়ে বাচেঁ। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে পারলে অনেকগুলো লাভ হবে। শহর যেমন পরিষ্কার হয়ে যাবে, তেমনি বিশ্বের বড় সমস্যা পলিথিনের সমাধান পাওয়া যাবে। এছাড়া সলিড ওয়েস্ট থেকে ডিজেলসহ এলপিজি, জেট বা অ্যাভিয়েশন ফুয়েল, জৈব সার, বায়োগ্যাস ইত্যাদি পাচ্ছি, এতে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হবে এবং কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হবে।
সকল দিক বিবেচনা করে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ওয়েস্ট টেকনোলজিস এলএলসির সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করছি। তাই সকলে দোয়া করবেন যাতে এ প্রকল্পটি সফল হয় এবং এ প্রকল্প বাস্তবায়নে সকল ধরনের সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হবে বলেও যোগ করেন তিনি।
ড. মঈনউদ্দিন সরকার বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা আমাদের সকলের জন্য অনেক বড় দায়িত্ব। আমরা সকল সিটি কর্পোরেশনেই গিয়েছি। সবাই রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনকে গ্রিন বলেছে। আমাদের মধ্যে বিশ্বাস আছে যে, বাংলাদেশীরাও পারে। আমরা আগেও দেখিয়েছি। এই প্লান্টটি বাংলাদেশে করতে পারলে পৃথিবীর অনেক দেশ প্রকল্পটি দেখতে এখানে আসবে।
শত ব্যস্ততার মধ্যে সময় বের করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য তিনি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন ও মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে ধন্যবাদ জানান।
এর আগে, পস্নাস্টিক বর্জ্য থেকে জ্বালানী তেল উৎপাদন প্রযুক্তির উদ্ভাবক বাংলাদেশি বিজ্ঞানী ড. মঈন উদ্দিন সরকার জানিয়েছেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়ে এক লিটার ডিজেল উৎপাদনে ব্যয় হবে মাত্র ২৫ টাকা। বর্তমান বিশ্বে পরিবেশের জন্য প্লাস্টিক বর্জ্য চরম হুমকি। কিন্তু এ বর্জ্য যথাযথ প্রক্রিয়াজাত করার মাধ্যমে দেশের সমৃদ্ধিতে কাজে লাগানো সম্ভব। ইতোমধ্যে এই বর্জ্য থেকে জ্বালানী তেল, এলপিজি গ্যাস ও জেট ফুয়েল তৈরি করতে আমরা আমেরিকাতে প্লান্ট স্থাপন করেছি। এর মাধ্যমে প্রতি টন প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জ্য থেকে ১ হাজার ৩০০ লিটার জ্বালানী তেল, ১০ সিলিন্ডার এলপিজি গ্যাস ও ২৩ লিটার জেট ফুয়েল তৈরি হচ্ছে।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- রাসিকের সাবেক দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র ও ২১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. নিযাম উল আযীম, ১৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ আব্দুল মোমিন, ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম, ১৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ তৌহিদুল হক, সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আজাহার আলী, প্রধান প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুল হক, রাবির ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স বিভাগের প্রফেসর ড. জিএম শফি, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মোঃ মামুন ও ওয়েস্ট টেকনোলজিস এলএলসির কর্মকর্তাবৃন্দ।