টিকাদান কর্মসূচির উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠীঃ
০-১১ মাস বয়সী সকল শিশু
১৫-১৮ মাস বয়সী সকল শিশু
১৫-৪৯ বছর বয়সের সন্তান ধারণ ক্ষমতা সকল মহিলা
প্রতিরোধযোগ্য রোগসমূহঃ
১। শিশুদের যক্ষা
২। পোলিওমাইলাইটিস
৩। ডিফথেরিয়া
৪। হুপিং কাশি
৫। মা ও নবজাতকের ধনুষ্টংকার
৬। হেপাটাইটিস-বি
৭। হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা- বি জনিত রোগসমূহ
৮। হাম
৯। রুবেলা
১০। নিউমোকক্কাল জনিত নিউমোনিয়া
১। শিশুদের যক্ষাঃ
কিভাবে ছড়ায়ঃ যক্ষা রোগে আক্রান্ত লোকের সাথে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ, আক্রান্ত রোগীর হাঁচি, কাশি ও থুতুর মাধ্যমে এ রোগের জীবাণু ছড়ায় ও অন্যদের আক্রান্ত করে।
লক্ষণঃ
অল্প অল্প জ্বর ও কাশি থাকে
ক্ষধা কমে যায় এবং শিশুর ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে যায়
আক্রাšÍ গ্রন্থি ফুলে যায় এবং পেকে গিয়ে ক্ষতের সৃষ্টি করে সাধারণত: বগলবা ঘাড়ের গ্রন্থি আক্রা্ন্ত হয়।
ধীরে ধীরে শিশুর ওজন কমে যায়
হাড় আক্রান্দ হলে হাড়ের জোড়া ফুলে যায়, ব্যাথা হয় এবং নাড়াচড়া করতে পারে না।
মেরুদন্ডে আক্রান্ত মেরুদন্ডে ব্যাথা হয় এবং বাঁকা হয়ে যায়।
ভয়াবহতাঃ সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না করলে আক্রান্ত শিশুর মৃত্যুর হতে পারে।
প্রতিরোধঃ জন্মের পরপরই ১ ডোজ বিসিজি টিকা দিয়ে শিশুকে যক্ষা রোগ থেকে রক্ষা করা যায়।
২। পোলিওঃ
কিভাবে ছড়ায়ঃ
পোলিও আক্তান্ত শিশুর মলের মাধ্যমে পানি ও খাবার জীবাণুযুক্ত হয়। এই জীবাণুযুক্ত পানি পান করলে বা জীবাণুযুক্ত খাবার খেলে পোলিও রোগ হয়।
লক্ষণঃ
১-৩ দিনঃ
শিশুর সর্দি, কাশি এবং সামান্য জ্বর হয়।
৩-৫ দিনঃ
মাথা ব্যাথা করে ঘাড় শক্ত হয়ে যায়
শিশুরএক বা একাধিক হাত অথবা পা থলথলে ও অবশ হয়ে যায়
শিশু দাঁড়াতে চায় না এবংদাঁড় করাতে চাইলে শিশু কান্নাকাটি করে এবং নড়াচড়া করতে পারে না
উঁচু করে ধরলে আক্রামত্ম পায়ের পাতা ঝুলে পড়ে।
শিশুর আক্রামত্ম অঙ্গ ক্রমশ দূর্বল হয় এবং পরে স্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে যেতে পারে।
ভয়াবহতাঃ শিশুর এক বা একাধিক অঙ্গ অবশ হয়ে যায়। ফলে আক্রামত্ম অঙ্গ দিয়ে স্বাভাবিক কাজ করতে পারে না। পরবর্তীতে আক্রামত্ম অঙ্গের মাংসপেশী শুকিয়ে যায়। শ্বাস প্রশ্বাসের পেশী অবশ হলে শ্বাস বন্ধ হয়ে শিশু মারাও যেতে পারে।
প্রতিরোধঃ চার ডোজ পোলিও টিকা খাওয়ায়ে তা শিশুকে পোলিও রোগ থেকে রক্ষা করে।
৩। ডিপথেরিয়াঃ
কিভাবে ছড়ায়ঃ ডিপথেরিয়া রোগের জীবাণু রোগাক্রামত্ম শিশুর হাঁচি কাশির মাধ্যমে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। সুস্থ শিশুর আক্রামত্ম শিশুর সংস্পর্শে এল এমনকি আক্ত্রা মত্ম শিশুর ব্যবহৃত সামগ্রীর ( তোয়ালে, খেলনা ইত্যাদি) মাধ্যমে এ জীবাণু শরীওে প্রবেশ করলে এ রোগ দেখা দেয়।
লক্ষণঃ
১-৩ দিনঃ
শিশুখুব সামান্যতেই ক্লামত্ম হয়ে পড়ে।
ঠিকমত খায় না এবং খেলাধুলা করে না।
শিশুর জ্বর, সর্দি ও কাশি দেখা দেয়।
গলা ফুলে যায় এবং কণ্ঠনালী বা গলদেশের ভিতরে সরের মত সাদা আসত্মরণ পড়ে।
৪-৬ দিনঃ
শিশু খুবই দূর্বল পড়ে
কণ্ঠনালীর গ্রন্থিগুলি খুব বেশী ফুলে যায়।
কণ্ঠনালীতে ধুসর রং- এর সুস্পষ্ট আসত্মর পড়ে।
আসত্মরনটিশ্বাসনালীতে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং শ্বাসকষ্টের সৃষ্টি করে।
ভয়াবহতাঃ এ রোগের জীবাণু হৃৎপিন্ড এবংসণস্নায়ুতন্ত্রকে আক্রামত্ম করতে পারে এবং শিশুর মৃত্যু ঘটাতে পারে।
প্রতিরোধঃ তিন ডোজ পেন্টাভ্যালেন্ট ভ্যাকসিন দিয়ে শিশুকে এ রোগ থেকে রক্ষা করা যায়।
৪। হুপিং কাশিঃ
কিভাবে ছড়ায়ঃ হুপিংকাশিতে আক্রামত্ম শিশু হাঁচি কাশি দেয়ার সময় বাতাসের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়। সুস্থ শিশু আক্রামত্ম শিশুর সংস্পর্শে এলে এমনকি আক্রামত্ম শিশুর ব্যবহৃত সামগ্রীর(তোয়ালে, খেলনা ইত্যাদি) মাধ্যমে এ জীবানু শরীওে প্রবেশ করলে এ রোগ দেখা দেয়।
লক্ষণঃ
১ম সপ্তাহঃ
শিশুর জ্বর হয়
নাক দিয়ে পানি পড়ে
চোখ মুখ লাল হয়ে যায় এবং কাশি দেখা দেয়
২য় সপ্তাহঃ
কাশি মারাত্নক আকার ধারন করে
শিশু যখন কাশে তখন তার খুব কষ্ট হয় এবং চোখ স্ফীত ও লাল হয়ে যায়।
কাশির পর শিশু হুপ শব্দ করে শ্বাস নেয় তবে ছয় মাসের কম বয়স্ক শিশু হুপ শব্দ ছাড়াও কাশতে পাওে এবং বমি করতে পারে
অনেক সময় বমিও হয়।
যদি কাশি তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলে তাহলে হুপিং কাশি বলে অনুমান করা যেতে পারে
৩-৬ সপ্তাহঃ
কাশি ধীরে ধীরে কমে যায়।
ভয়াবহতাঃ
হুপিং কাশির ফলে শিশু দুর্বল হয়ে যায় এবং অপুষ্টিতে ভোগে। শিশুর নিউমোনিয়া হতে পারে। রক্ত জমাট বেঁধে শিশুর চোখে সমস্যা দেখা দিতে পারে। শিশুর মসিত্মকের ক্ষতি হতে পারে।
প্রতিরোধঃ তিন ডোজ পেন্টাভ্যালেন্ট ভ্যাকসিন দিয়ে শিশুকে এ রোগ থেকে রক্ষা করা যায়।
৫। মা ও নবজাতকের ধনুষ্টংকারঃ
কিভাবে ছড়ায়ঃ এই রোগের জীবাণু পশুর মলের মাধ্যমে নির্গত হয়ে মাটির সাথে মিশে এবং যেকোন কাটা/ক্ষত স্থান দিয়ে শরীরে ঢোকে। শিশুর জন্মের পর অপরিস্কার (জীবাণুযুক্ত) ছরি,কাঁচি বা বেস্নড দিয়ে নাড়ি কাটলে অথবা কাঁচা নাড়িতে গোবর বা ময়লা কাপড় ব্যবহার করলে নবজাত শিশুর ধনুষ্টংকার রোগ হতে পারে। জন্মেও ২৮ দিন পর্যন্ত শিশুকে নবজাতক বলা হয়।
লক্ষণঃ
শিশুঃ
জন্মের ১ম ও ২য় দিন শিশু স্বাভাবিকভাবে কাঁদতে পারে এবং বুকের দুধ টেনে খেতে পারে। পরবর্তীতে-
জন্মের ৩-২৮ দিনের মধ্যে শিশু অসুস্থ্য হয়ে পড়ে
বুকের দুধ খাওয়া বন্ধ করে দেয়,
শিশুর মুখ ও চোয়াল শক্ত হয়ে যায় এবং জোরে কাঁদতে পারে না।
খিঁচুনি হয়
কখনো কখনো শরীর পেছনের দিকে ধনুকের মতো বাঁকা হয়ে যায়।
মাঃ গর্ভকালীন সময় বা প্রসবের ৬ সপ্তাহের মধ্যে মা ধনুষ্টংকাওে আক্রামত্ম হতে পারে। সাধারনত যেকোনো ক্ষতের ২ থেকে ২১ দিনের মধ্যে ধনুষ্টংকার হতে পাওে তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ১৪ দিনের মধ্যে হয়ে থাকে।
মায়ের ধনুষ্টংকারের লক্ষন নবজাতকের ধনুষ্টংকারের মতে হয়ে থাকে, যেমন- চোয়াল শক্ত, ঘাড়ের ও শরীরের মাংসপেশী শক্ত, গিলে খেতে অসুবিধর এবং খিঁচুনি।
ভয়াবহতাঃ যে সকল কারনে শিশুর মৃত্যু হয় এবং নবজাতকের ধনুষ্টংকাওে আক্রামত্ম শিশুমৃত্যু একটি। এই রোগে আক্রামত্ম নবজাতক বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মারা যায়। মাতৃমৃত্যুর শতকরা ৫ শতাংশ দায়ী মায়ের ধনুষ্টংকার।
প্রতিরোধঃ ১৫-৪৯ বছর বয়সের সন্তান ধারণক্ষম সকল মহিলাকে সময়সূচি অনুযায়ী ৫ ডোজ টিটি টিকা দিয়ে নবজাতক ও মায়ের ধনুষ্টংকার রোধ করা যায়। এছাড়া নিরাপদ প্রসব পদ্ধতি অভ্যাস কারা ও নাড়ি কাটার জন্য জীবানুমুক্ত ব্লেড ব্যবহার করা দরকার।
৬। হেপাটাইটিস- বিঃ
কিভাবে ছড়ায়ঃ
হেপাটাইটিস- বি ভাইরাস আক্রামত্ম রোগীর রক্ত ও দেহ রসের মাধ্যমে ছড়ায়।
এ ভাইরাস একজন হতে আরেকজনের শরীরে নিমণলিখিত উপায়ে সংক্রমিত হয়-
জন্মের সময় নবজাতক তার মায়ের কাছ থেকে সংক্রমিত হতে পারে। মা যদি সন্তান প্রসবের আগেই হেপাটাইটিস-বি রোগে আক্রামত্ম হয়ে থাকেন তাহলে শিশুটি যখন তার মায়ের রক্ত বা জরায়ু হতে নিঃসৃত রসের সংস্পর্শে আসে তখনই সংক্রমিত হয়। তবে বুকের দুধের মাধ্যমে এই ভাইরাস সংক্রমনের প্রমান এখনও পাওয়া যায়নি।
খেলাধুলার সময়ে আঘাতের কারনে হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসে আক্রামত্ম শিশু হতে রক্ত বা অন্যান্য দেহ রসের মাধ্যমে সুস্থ শিশুর দেহে হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে। ইনজেকশন দেওয়ার সময় জীবানুমুক্ত সরঞ্জামাদি ব্যবহার না করলে বা নিরাপদ রক্ত সঞ্জালনের মাধ্যমে একজন হিপাটাইটিস-বি রোগে আক্রান্ত লোকের দেহ হতে আরেকজন সংক্রমিত হতে পারে।
অনিরাপদ যৌন মিলনের মাধ্যমেও এই ভাইরাস সংক্রমিত হতে পারে।
লক্ষণঃ প্রথমবারের মতো যখন একজন শিশোর/ কিশোরী বা প্রাপ্ত বয়স্ক লোক হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসে আক্রামত্ম হয় তখন তার মধ্যে সাধারনত নিমণলিখিত লক্ষনসমূহ প্রকাশ পায়-
চোখ হলুদ হয়ে যায়, একে জন্ডিস বলে
প্রশাবের রং হলুদ হয়
পেটে ব্যথা এবং সেই সাথে জ্বও হয়
ক্ষুধা মন্দা এবং বমি বমি ভাব বা বমি হয়ে থাকে
মাংসপেশী এবং হাড়ের সংযোগস্থলে(গিটে) ব্যথা হয়
আক্রান্ত ব্যক্তি সবসময় অস্বস্তি অনুভব করে
এখানে বিশেষভাবে উলেস্নখযোগ্য যে, হেপাটাইটিাসের যেকোনো ভাইরাস দ্বারা আক্রামত্ম হলেই জন্ডিস দেখা দেয়। আর হেপাটাইটিস-বি ভ্যাকসিন ‘‘বি’’ ভাইরাস দ্বারা আক্রামত্ম হওয়া থেকে রক্ষা করে। সুতরাং এ কথা বলা যায় না যে, হেপাটাইটিস-বি ভ্যাসসিন দেওযার পরে আর জন্ডিস হবে না। কারণ ‘‘বি’’ভাইরাস ছাড়াও বাকি ৪ প্রকার (হেপাটাইটিস এ.সি.ডি এবং ই) ভাইরাসে আক্রামত্ম হলে বা অন্য কারণে জন্ডিস হতে পারে।
ভয়াবহতাঃ ‘‘জীবনের শুরুতে হেপাটাইটিস- বি’’ ভাইরাসে আক্রামত্ম শিশুদেও মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগ হেপাটাইটিস-বি ভাইরাসের দীর্ঘমেয়াদি বাহক হিসাবের কাজ কওে এবং ৯০ ভাগের মধ্যে শতকরা ১৫-২৫ ভাগ লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যান্সারের কারনে মৃত্যুমুখে পতিত হয়।
প্রতিরোধঃ ৩ ডোজ পেন্টাভ্যালেন্ট ভ্যাকসিন দিয়ে শিশুকে এ রোগ থেকে রক্ষা করা যায়।
৭। হিমোফাইলাইস ইনফ্লুয়েঞ্জা- বিঃ
কিভাবে ছড়ায়ঃ এই রোগের জীবাণু রোগাক্রাšÍ শিশুর হাঁচি কাশির মাধ্যমে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। সুস্থ শিশু আক্রান্ত শিশুর সংস্পর্শে এলে এমনকি আক্রাšÍ শিশুর ব্যবহৃত সামগ্রীর তোয়ায়ে, খেলনা ইত্যাদি) মাধ্যমে এ জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে।
লক্ষণঃ
ব্যাকটেরিয়াল মেনিনজাইটিস
মাথা ব্যথা, জ্বর, বমি ও ঘাড় শক্ত হয়ে যায়
উজ্জ্বল আলোর প্রতি সংবেদনশীল হয়
গিটে ব্যথা হয়
ঘুম ঘুম ভাব হয়
শরীরের তাপমাত্রা কমে যায়
অচেতন হয়ে যায়
মারাত্নক নিউমোনিয়াঃ
যে কোনো একটি সাধারণ বিপদজনক লক্ষণ থাকে, যেমন - পান করতে বা বুকের দুধ খেতে পারে না, অথবা সব খাবার বমি করে ফেলে, অথবা খিঁচুনি হয়।
শ্বাস নেয়ার সময় বুকের নিচের অংশ ভিতরে দেবে যায়
দ্রুত শ্বাস
ভয়াবহতাঃসময়মতো সঠিক চিকিৎসা না করলে আক্রাšÍ শিশু পঙ্গু হতে পারে এমনকি শিশুর মৃত্যুও হতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসার পরেও শিশুর মৃত্যু হতে পারে।
প্রতিরোধঃ তিন ডোজ হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি ভ্যাকসিন দিয়ে শিশুকে এ রোগ থেকে রÿv করা যায়।
৮। হামঃ
কিভাবে ছড়ায়ঃ
হামে আক্রামত্ম শিশু থেকে এই রোগের জীবাণ বাতাসের মাধ্যমে সুস্থ শিশুর শরীরে প্রবেশ করে এবং হাম রোগে আক্রামত্ম হয়।
লক্ষণ সমূহঃ
১-৩ দিনঃপ্রচন্ড জ্বর সর্দি ও কাশি এবং চোখ লাল হয়ে য়ায়। ৪র্থ দিনঃ জ্বর কমে আসে মুখে এবং শরীরে লালচে দানা দেখা দেয় হামের দানা উঠার ৩/৪ দিন পর দানা কালচে খুসকির মতো হযে ঝরে য়ায়।
ভয়াবহতাঃ হাম হলে শিশু নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া ও পুষ্ঠিহিনতায় ভোগতে পারে। কান পাকা রোগ হতে পারে। শিশুর রাত কানা রোগ দেখা দিতে পারে, এমনকি চোখ অন্ধ হয়ে যেতে পারে। হামের নানা জটিলতার কারণে শিশু মারাও যেতে পারে।
প্রতিরোধঃ
১ ডোজ হামের টিকা দিয়ে শিশুকে হাম রোগ থেকে প্রতিরোধ করা যায়।
হামের আক্রান্ত শিশুকে অবশ্যই বয়স অনুযায়ী প্রাপ্ত ভিটামিন এ পর পর ২ দিন খাওয়াতে হবে।
৮। রুবেলাঃ
কিভাবে ছড়ায়ঃ রুবেলা আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে এই রোগের জীবাণ বাতাসের সাহায্যে শ্বাশতন্ত্রের মাধ্যমে সুস্থ শরীরে প্রবেশ করে।
লক্ষণ সমূহঃ
গোলপি রং-এর হালকা দানা দেখা য়ায়। প্রথমে দানা মুখমন্ডলে বের হয় যা পরবর্তী ৫-৭ দিনের মাধ্যে সারা শরীরে ছড়িয়ে পরে।
ঘাড়ের গ্রন্থি ফুলে যাওয়া
অল্প জ্বর, সর্দি ও কাশি, গলা ব্যথা, মাথা ব্যথা
চোখ লাল হওয়া
ক্ষুদা মন্দা, বমি বমি ভাব
কিছু কিছু ক্ষেত্রে অস্থি সন্ধি ব্যথা হতে পারে।
অস্বস্থি বোধ করা
ভয়বহতাঃ
কনজেনিটাল রম্নবেলা সিনড্রম
নাক দিয়ে রক্ত পড়া
প্রসাবের সাথে রক্ত যাওয়া
অস্থি সন্ধিতে ব্যথা
মস্তিস্কের ঝিল্লির প্রদাহ
অন্ত্রে রক্তক্ষরণ
প্রতিরোধঃ ৯ মাস বা ২৭০ দিন বয়স পূর্ণ হলে এক ডোজ এমআর (হাম-রম্নবেলা) দিকা দিয়ে শিশুকে রম্নবেলা রোগ থেকে প্রতিরোধ করা যায়।
নিউমোকক্কাল নিউমোনিয়াঃ
কিভাবে ছড়ায়ঃ এই রোগের জীবাণ প্রধানতঃ আক্রামত্ম রোগীর হাঁচি-কাশির মাধমে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। সুস্থ শিশু আক্রামত্ম শিশুর সংস্পর্শে এলে এমনকি আক্রামত্ম শিশুর ব্যবহৃত সামগ্রীর (তোয়ালে, খেলনা ইত্যাদি) মাধ্যমে এ জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে। এছাড়াও রোগের জীবাণু সুস্থ মানুষের নাক, সাইনাস ও মুখে থাকতে পারে যা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে ফুসফুসে ছড়িয়ে এ রোগ ঘটাতে পারে।
লক্ষণঃ
নিউমোনিয়াঃ
কাশি অথবা শ্বাসকষ্টে আক্রামত্ম শিশুর বয়স অনুযায়ী দ্রুত শ্বাস নিউমোনিয়ার লক্ষণ
শ্বাস নেয়ার সময় বুকের নিচের অংশ ভিতরে ডেবে যাওয়া মারাত্নক নিউমোনিয়ার লক্ষন
ব্যাকটেরিয়াল মেনিনজাইটিসঃ
মাতা ব্যথা, জ্বার, বমি ও ঘাড় শক্ত হয়ে যায়
উজ্জ্বল আলোর প্রতি সংবেদনশীল হয়
ঘুম ঘুম ভাব হয়
শরীরের তাপমাত্রা কমে যায়
অচেতন হয়ে যায়
ভয়াবহতাঃ
মারাত্নক শ্বাসকষ্ট
শরীরের তাপমাত্রা কমে যায় এবং অচেতন হয়ে যায়
সময়মত সঠিক চিকিৎসা না করলে আক্রামত্ম শিশু পঙ্গু হতে পারে এমনকি শিমুর মৃত্যুর হতে পারে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসার পরেও শিশুর মৃত্যু হতে পারে।
প্রতিরোধঃ তিন ডোজ নিউমোকক্কাল কনজুগেট ভ্যাকসিন (পিসিভি) দিয়ে শিশুকে এ রোগ থেকে রক্ষা করা যায়।
নিয়মিত টিকাদান সময়সূচিঃ
০-১১ মাস এবং ১৫ মাস বয়সের শিশুদের টিকাদান সময়সূচি
রোগের নাম |
টিকার নাম |
টিকার ডোজ |
ডোজের সংখ্রা |
ডোজের মধ্যে বিরতি |
টিকা শুরম্ন করার সঠিক সময় |
টিকাদানের স্থান |
টিকার প্রয়োগ পথ |
যক্ষ্মা |
বিসিজি |
০.০৫ এমএল |
১ |
- |
জন্মের পর থেকে |
বাম বাহুর উপরের অংশে |
চামড়ার মধ্যে |
ডিফথেরিয়া, হুপিংকাশি, ধনুষ্টংকার, হেপাটাইটিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জ- বি |
পেন্টাভ্যালেন্ট টিকা (ডিপিটি হেপাটাইসিট-বি, হিব |
০.৫ এমএল |
৩ |
৪ সপ্তাহ |
৬ সপ্তাহ ১০ সপ্তাহ ১৪ সপ্তাহ |
বাম উরুর মধ্যভাগের বহিরাংশে |
মাংসপেশী‘ |
নিউমোকক্কালজনিত নিউমোনিয়া |
পিসিভি টিকা |
০.৫ এমএল |
৩ |
৪/৮ সপ্তাহ |
৬ সপ্তাহ ১০ সপ্তাহ ১৪ সপ্তাহ |
ডান উরুর মধ্যভাগের বহিরাংশে |
মাংসপেশী |
পোলিওমাইলাইটিস |
ওপিভি টিকা |
২ ফোঁটা |
৩* |
৪ সপ্তাহ |
৬ সপ্তাহ ১০ সপ্তাহ ১৪ সপ্তাহ |
মুখে |
মুখে |
আইপিভি টিকা |
০.৫ এমএল |
১ |
- |
১৪ সপ্তাহ |
ডান উরুর মধ্যভাগের বহিরাংশে |
মাংসপেশী |
|
হাম ও রম্নবেলা |
এমআর টিকা |
০.৫ এমএল |
১ |
- |
৯ মাস বয়স পূর্ণ হলে |
ডান উরুরমধ্যভাগের বহিরাংশে
|
চামড়ার নিচে |
হাম ও রম্নবেলা (২য় ডোজ) |
হামের টিকা |
০.৫ এমএল |
১ |
- |
১৫ মাস বয়স পূর্ণ হলে |
বাম উরুর মধ্যভাগের বহিরাংশে |
চামড়ার নিচে |
টিটি (সাধারণ)
আজকের কিশোরী আগামী দিনের মা। মা ও গর্ভের নবজাতকের ধুনষ্টংকারের হাত থেকে রক্ষার জন্য সমত্মান ধারণক্ষম ১৫-৪৯ বছরের সকল মহিলাকে ৫ বারে ৫টি টিটি (টিটেনাস) টিকা দেয়া হয়। আগাম টিটি (টিটেনাস) টিকা দেয়া হলে মা ও গর্ভের নবজাতকের টিটেনাসের ভয় থাকে না। এছাড়াও টিটি বা টিটেনাস টিকা দেয়ার কারণে ভবিষ্যতে যে কোন কাটা-ছেড়ায় টিটেনাস থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
নিয়মিতটিটি টিকার সময়সূচিঃ
ডোজের সংখ্যা |
মাত্রার মধ্যে বিরতি |
টিকার ডোজ |
টিকাদানের স্থান |
টিকার প্রয়োগ পথ |
টিটি-১ |
১৫ বছর বয়স হলেই |
০.৫ এমএল |
বাহুর উপরের অংশে |
মাংসপেশী |
টিটি-২ |
টিটি-১ পাওয়ার কমপক্ষে ২৮ দিন পর |
|||
টিটি-৩ |
টিটি-২ পাওয়ার কমপক্ষে ৬ মাস পর |
|||
টিটি-৪ |
টিটি-৩ পাওয়ার কমপক্ষে ১ বছর পর |
|||
টিটি-৫ |
টিটি-৪ পাওয়ার কমপক্ষে ১ বছর পর |